LAKSHMIR BHANDAR SCHEME: বাংলার প্রতিটি ঘর আজ যেন সমৃদ্ধির এক জীবন্ত উদাহরণ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প, যা এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে, বাংলার সাধারণ মানুষের আর্থিক সুরক্ষার ভিত্তি স্থাপন করেছে। মূল্যবৃদ্ধি এবং বাজারে অস্থিরতার মধ্যে এই প্রকল্প সাধারণ মানুষের জন্য এক উল্লেখযোগ্য আর্থিক সহায়তার পথপ্রদর্শক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
বর্তমানে বাংলায় ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির আর্থিক অনুদান নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ কেন্দ্রের নীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প বাংলার কোটি কোটি পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদান করছে, যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগের সফলতার প্রমাণ।
মালদহে একটি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, “এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়া মহিলারা সারা জীবন এর সুবিধা পাবেন।” তিনি আরো বলেছেন, “আমি যা বলি, তা করি। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের উপভোক্তারা ৬০ বছর বয়স পার করলেই বার্ধক্য ভাতার সুবিধা পেতে শুরু করবেন। ভাণ্ডারের অর্থসাহায্য এবং উপভোক্তার সংখ্যা ক্রমাগত বাড়বে।” এর মাধ্যমে তিনি প্রকল্পটির দীর্ঘমেয়াদী সুফল নিশ্চিত করেছেন।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প শুধু বাংলায় নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্যেও অনুপ্রাণিত হয়ে ‘লাডলি বেহনা’ বা ‘মাঈয়া সম্মান’ নামক প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এমনকি, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোও ভোটের প্রচারে এমন প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, যা একসময় মমতার প্রকল্পকে সমালোচনা করেছিল। এখন তারা সেই ধরনের সামাজিক প্রকল্পে আগ্রহী হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি ২১ লক্ষ মহিলাকে প্রতি মাসে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তফসিলি জাতি ও উপজাতি মহিলারা পাচ্ছেন ১২০০ টাকা, এবং অন্যান্য মহিলারা পাচ্ছেন ১০০০ টাকা। সামনের বাজেটে এই ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর কথা আলোচনা চলছে, যা প্রকল্পটির উপকারিতা আরও বাড়াবে।
আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের নতুন আবেদন গ্রহণ করা হবে। এতে প্রকল্পের উপভোক্তার সংখ্যা আরও বাড়বে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন, “মানুষের হাতে টাকা না দিলে জীবনযাত্রার মান উন্নত করা যাবে না।” এই চিন্তাধারা থেকেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প বাংলার আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বিপক্ষের অস্বীকার থাকা সত্ত্বেও, আজ বাংলার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সারা দেশের জন্য এক মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা অন্য রাজ্যগুলির কাছে এক শিক্ষার দৃষ্টান্ত।